হৃদ রোগের ঝুকি কমান, সুস্থ থাকুন

হৃদরোগ থেকে বাচার উপায়

বিশ্বের মোট মৃত্যুর প্রায় ৩২ শতাংশ মৃত্যু হয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে।হৃদ রোগের চিকিৎসা যেমন জরুরি তেমনি এটির প্রতিরোধ ও জরুরি। খারাপ কিছু অভ্যাস এবং অসচেতনতার কারনে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।তাই সময় থাকতে সচেতন হওয়া জরুরি।রক্তে যখন কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় তখনই হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।তাই ঝুঁকি কমানোর জন্য শরীরচর্চা আর খাবারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে।যেসব খাবার ঝুঁকি কমায় সেগুলো এখানে দেওয়া হলো।

টমেটো

টমেটোতে আ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুকি কমায়।গবেষণা করে দেখা গেছে টমেটোতে থাকা পলিফেলন চর্মরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।

আরোও পড়ুনঃ চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
হযরত আনাস রাযি.-এর সাথে হাজ্জাজের গোস্তাখী
জাপানি মেয়েদের রুপের গোপন রহস্য জেনে নিন

আখরোট

আখরোটে আছে ওমেগা-থ্রি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হৃদরোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।দৈনিক এক মুঠো বা এক আউন্স আখরোট খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।তাছাড়াও আখরোটের তেল খুব কার্যকরি হৃদরোগের জন্য। তাই রান্না বা পরিবেশনে আখরোটের তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

দই

আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এর গবেষণা অনুযায়ী দৈনিক ক্যালরির দুই শতাংশ দই থেকে গ্রহন করে এমন ২০০ জনের ৩১ শতাংশ দুশ্চিন্তার প্রবনতা কম অন্যদের তুলনায়। দইয়ে আছে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম।চিনি ছাড়া দই খেলে ওজন কমে।

মিষ্টি আলু

মিষ্টি আলু খেলে ধীরে হজম হয় এবং পেটা ভরার অনুভূতি দেয় অনেকক্ষণ। তাছাড়া ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে।মিষ্টি আলুতে আছে ভিটামিন এ,সি এবং বি সিক্স।

বাদাম

কাঠবাদামে আছে ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্টকে সুরক্ষিত রাখে।

শস্য জাতিয় খাবার

পুষ্টিবিদদের মতে শস্যে থাকা আঁশ হৃদরোগ সৃষ্টিকারী কোলেস্টেরল কমায়। এছাড়াও খোসাসহ সবজি যেমন ঢেঁড়স, বরবটি,শিম, কচুর লতি ইত্যাদি। টক জাতিয় ফল যেমন জাম্বুরা, পেয়ারা,আমলকি, কামরাঙা। সব ধরনের মাছ বিশেষ করে সমদ্রের মাছ।

যেসব খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে সেগুলো নিয়েও আলোচনা করা হলো চিংড়ি

হৃদরোগীদের জন্য চিংড়ি বর্জনীয়। চিংড়িতে প্রচুর পরিমান কোলেস্টেরল থাকে যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। স্যামন মাছের সাড়ে তিন আউন্সের এক পিস মাছে থাকে ৬২ মিগ্রা কোলেস্টেরল আর সেখানে একই পরিমান চিংড়ি মাছে থাকে ১৮৯ মিগ্রা কোলেস্টেরল।

মাছের মাথা ও ডিম

মাছে মাথা আর ডিম রক্তের লিপিড প্রোফাইল বাড়িয়ে দেয়। তাই মাছের মাথা আর ডিম হার্টের রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।

রেডমিট

রেডমিট হৃদরোগের অন্যতম কারন।রেড মিট হার্টের ব্লক সৃষ্টি করে।তবে সেটা শুধু কোলেস্টেরল বা ফ্যাট তা কিন্তু নয়। গবেষণা করে দেখা গেছে রেডমিটে কারনিটাইন নামক যৌগ পদার্থ পাওয়া যা দেহে তৈরি হয় এবং ট্রিমাথাইলেন এন অক্সাইড নিঃসরন করে এবং এটি ব্লক সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।

ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার

খাবার যত ভাজা হয় তত এর গুনাগুন বা খাদ্যমান কমতে থাকে এবং সাথে যুক্ত হয় ক্ষতিকর ফ্যাট যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডিমের কসুম

হৃদরোগীদের জন্য ডিমের কসুম ক্ষতিকর। ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকে যা হার্টকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।একটা মুরগির ডিমে যে পরিমান কোলেস্টেরল থাকে তার পুরোটাই থাকে কুসুমে।
এছাড়াও কলিজা,মগজ, ঘি, মাখন, হাড়ের মজ্জা বর্জন করা উচিত।

হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে ঘরোয়া ঔষধ

ঘরোয়াভাবে প্রাকৃতিক কিছু খাবার হৃদরোগের ঝুকি কমায়।ঘরোয়া ঔষধ তৈরি করে খেলে হার্টঅ্যাটাকের আশঙ্কা কমবে এবং হার্ট ভালো থাকবে।চারটি উপকরন দিয়ে এ ঔষধ তৈরি করা যায়

  1. আদা- ১ একটা ছোট টুকরো
  2. রসুন- ২ চামচ পেস্ট
  3. লেবুর রস- ২ চামচ
  4. মধু- ১ চামচ

সবগুলো উপকরন ব্লন্ডারে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে।প্রতিদিন সকালে খেতে হবে টানা ২ সপ্তাহ খাওয়ার পর সাতদিন খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। তারপর আবার খাওয়া শুরু করতে হবে। আদায় আছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরল পরিস্কার করে। রসুন খেলে ব্লকের কোনো সম্ভাবনাই থাকে না। রসুনে থাকা অ্যালিসিন কোলেস্টেরলের সাথে লড়াই করে হার্টকে সুস্থ রাখে। লেবুতে আছে ভিটামিন সি, ফাইবার ও ফ্লায়োবনেড যা কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে।

দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা এবং ঘুমানো

ঘুম মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।প্রতিদিন ৮ ঘন্টা ঘুমানো জরুরি। হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন এতে হার্ট ভালো থাকবে।

নিয়মিত চেক-আপ

নিয়মিত চেক-আপ করা জরুরি। একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর ওজন, রক্তচাপ,কোলেস্টেরল, কিডনি,লিভার, থাইরয়েড চেক করুন।

ব্যায়াম করা

ব্যায়াম ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, উচ্চ কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং মানসিক চাপ থেকে রেহাই দেয়।হাটা, সাঁতার সাইকেল চালানোর মত কাজ করের শরীরচর্চা করা যায়।এতে ও সুফল পাওয়া যায়।হৃদ রোগ একটি মরন ব্যাধি তাই নিয়ম মেনে চলুন সুস্থ থাকুন।