লোক প্রশাসন বলতে কি বুঝ?
জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের সাথে সাথে নতুন নতুন বিষয়বস্তু সংযোজন ও সম্মিলন হয়ে আসছে। দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য এসবই সত্যের অন্বেষণ, সুন্দর জীবনের সাধনা, নবতর চিন্তার বিকাশ ও বহুমুখী উন্নয়নের নিরবিচ্ছিন্ন প্রয়াস। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকগণই সর্বপ্রথমে এসব প্রশ্নের অবতারণা করেছিলেন। আর এসব প্রশ্নোত্তর খুঁজতে মানুষ সমাজের সংস্কারে হাত দিয়েছে যার পরিক্রমায় একসময় রাষ্ট্র নামক যন্ত্রটির উদ্ভব হয়, যেখানে সুবিচার পাওয়ার নিশ্চয়তা রয়েছে।
সুবিচার নিশ্চিতকল্পে রাষ্ট্রের একটি অন্যতম অঙ্গ সংগঠনরূপে লোক প্রশাসনের সূত্রপাত ঘটে, যার প্রধান কাজই হচ্ছে সরকারের সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। তবে এহেন কর্মকাণ্ড পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান, নীতিমালা প্রণয়ন, আইন-কানুন, কর্মচারী কর্মকর্তা নিয়োগ, তাদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। মোটকথা, সামাজিক এ কর্মকাণ্ডের একটি সুসমন্বিত রূপই হলো লোক প্রশাসন বা লোকের জন্য প্রশাসন, যা রাষ্ট্রের সামাজিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।
কম্পিউটার রক্ষনাবেক্ষন করবেন কিভাবে জেনে নিন
কিভাবে নিবেন চুলের যত্ন
হৃদ রোগের ঝুকি কমান সুস্থ্য থাকুন
বিজ্ঞানের অগ্রগতি, শিল্প-বিপ্লব ও নানাবিধ কলাকৌশল আবিষ্কার ও জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির ফলে মানবজীবনে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। এই জটিলতা দূর করতে রাষ্ট্রের ভূমিকা অপিরহার্য হয়ে পড়ে। কারণ রাষ্ট্রের কর্মপরিধি ক্রমবর্ধমান। তাই বিজ্ঞান ও কারিগরি বিদ্যার উন্নতির সাথে সাথে রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যের মধ্যে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।
এই শাস্ত্রের সূচনা আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson) এর প্রসিদ্ধ প্রবন্ধ The Study of Administration থেকে আবার কারো কারো মতে, জে. গুডনো (J. Goodnow) হলেন এর সূচনাকারী। আবার অনেকে এল. ডি. হোয়াইট (L. D. White) এর কথা উল্লেখ করেন। তবে হোয়াইট সর্বপ্রথম লোক প্রশাসন সংক্রান্ত সবচেয়ে আধুনিক গ্রন্থ রচনা করেন, যা ১৯০০ সালে প্রকাশিত হয়।
প্রশাসন কি (What is Administration)
লোক প্রশাসনের সংজ্ঞা দেওয়ার আগে আমাদের জানা দরকার প্রশাসন কি? মূলত প্রশাসন শব্দটি অত্যন্ত বিস্তৃত ও ব্যাপক অর্থে ববহৃত হয়, যার কার্যক্রম আদিম গুহাবাসী মানবগোষ্ঠীদের সময় থেকেই কোন না কোনরূপে মানব সমাজের বর্তমান। আদিম সমাজজীবনে সভ্যতার সূত্রপাতের প্রাক্কালে প্রশাসনিক কর্মতৎপরতা শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। কারণ সৃষ্টিগতভাবে মানুষ অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় কিছুটা পরনির্ভরশীল।পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির ভিত্তিতে সমাজবদ্ধ জীবনযাপনই মানবগোষ্ঠীর সহজাত প্রবৃত্তি।
আর এ পারস্পরিক সহমর্মিতা ও সহযোগিতার বিষয়টি যখনই উদ্ভব হয়েছে তখনই প্রশাসন (administration) বিষয়টির সূত্রপাত হয়েছে। তবে প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে, যেটা পূরণে সামগ্রিক প্রচেষ্টা চালানো হয়। অর্থাৎ কোন একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সংঘবদ্ধ কাজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাই হচ্ছে প্রশাসন। যেমন- সন্তান জন্মগ্রহণের পর পিতা-মাতার সমবেত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় একদিন শিশু বড় হয়। শিশু বড় হয়ে একদিন সমাজের কর্ণধার হবে, মানবকল্যাণে এগিয়ে আসবে, দেশ ও জাতির কাজের আসবে এহেন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পিতা-মাতার এ কর্মপ্রচেষ্টা।
এই সংঘবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টা প্রত্যেকটি পরিবার, সরকারি- বেসরকারি সংস্থা, অফিস আদালতে এবং ছোট বড় সবধরনের প্রতিষ্ঠানে লক্ষণীয়, যেখানে প্রশাসনের বিষয়টি চলে আসে। তবে অতীতের ব্যক্তি বিশেষে প্রশাসন ধারাটির পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রের কর্মপরিধি বিস্তৃত হওয়ার সাথে সাথে প্রশাসন ধারণারও পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। প্রশাসনের সংজ্ঞা (Definition of Administration) প্রশাসন সম্পর্কে E. N. Gladden বলেছেন, “প্রশাসন শব্দটি যদিও ব্যাপক ও শব্দাড়ম্বরপূর্ণ, তথাপি এর অর্থ অত্যন্ত সহজ ও মার্জিত।
” তাঁর মন্তব্য, "Administration is a long and slightly pompous word, but it has an humble meaning, for it means to care for or look after people, to manage affairs." এল. ডি. হোয়াইট (L. D. White) এর মতে, "Administration is the direction, coordination and control of many persons to achieve some purposes or objectives." অর্থাৎ, প্রশাসন হচ্ছে সুনির্দিষ্ট কতিপয় উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের আদেশ বা নির্দেশ, সমন্বয় সাধন ও কিছুসংখ্যক লোককে নিয়ন্ত্রণ করা।
তিনি আরো বলেছেন, "Administration as a process, common to all group effort; public or privat, civil or military, large scale or small scale. It is a process of work in a departmental store, a bank, a school, a hotel or a city." অর্থাৎ, প্রশাসন হচ্ছে একটি পদ্ধতি যেখানে সর্বসাধারণের সামগ্রিক দলগত কর্মপ্রচেষ্টা বিদ্যমান। এর দল সরকারি অথবা বেসরকারি, সিভিল অথবা সেনাবাহিনী, বৃহৎ অথবা ক্ষুদ্রতম পর্যায়ের হতে পারে। এটা এমনই একটি কর্মপ্রক্রিয়া, যা একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্কুল, হোটেল অথবা নগরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
লোক প্রশাসন (Public Administration)
লোক প্রশাসন প্রত্যয়টির যথাযথ পরিচয় প্রদান করা বেশ জটিল। কারণ এর ধারণা প্রসঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে। অধুনা প্রশাসনবিদ কেইডেন (Caiden) তাঁর বইয়ের শুরুতেই বলেছেন, "What exactly is public administration is impossible to be understood without detailed elaboration and numberous caveats."১৩ অর্থাৎ, লোক প্রশাসন কি? এ প্রশ্নের উত্তর বিশদ বর্ণনা ও বহু শর্ত ব্যতীত দেওয়া অসম্ভব।
লোক প্রশাসন ও বাংলাদেশ
লোক প্রশাসনের 'লোক' (Public) কথাটির অর্থ জনসাধারণ। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানে লোক বলতে কোন একক ব্যক্তিকে না বুঝিয়ে সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে বুঝানো হয়। আর ‘প্রশাসন' (Administration) কথাটির অর্থ রাষ্ট্রের শাসন। তাহলে দু'টি মিলে অর্থ দাঁড়াচ্ছে জনসাধারণের জন্য রাষ্ট্রের শাসন। আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে সামগ্রিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন সরকার।
তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি যে, রাষ্ট্রের প্রশাসনও একটি কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান, যা মানুষ নিজেদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে তৈরি করেছে। এ অর্থে রাষ্ট্র ও প্রশাসন সভ্যতার সূচনালগ্নে সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে খুব সহজ থাকলেও লোকসংখ্যা বৃদ্ধি ও তাদের প্রয়োজনের সাথে সাথে এর ক্ষেত্রও বৃদ্ধি পেয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রকে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে। আর এ সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণের হাতিয়ার হিসেবে প্রশাসনের জন্ম, যেখানে রাজনৈতিক নেতা বা রাষ্ট্রনায়ক এই হাতিয়ারের নিয়ন্ত্রক।
লোক প্রশাসনের সংজ্ঞা (Definition of Public Administration)
একটি স্বতন্ত্র বিষয় হিসেবে লোক প্রশাসনকে দেখাতে গিয়ে তাত্ত্বিকদের মধ্যে যথেষ্ট মতপার্থক্য পরিলক্ষিত। তারা দু'টি দৃষ্টিকোণ থেকে লোক প্রশাসনকে ব্যাখ্যা করেছেন। যথা
ক. সংহতিকরণ মতবাদ (Integral Approach) : এই মতবাদের প্রবক্তাদের ধারণা মতে, লোক প্রশাসন ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কাজ লোক প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত। এই মতবাদের প্রবক্তা হলেন এল. ডি. হোয়াইট (L. D. White), উইলোবি (Willoughby) উড্রো উইলসন (Woodrow Wilson), ই. এম. ডিমোক (E. M. Dimock) প্রমুখ।
খ. ব্যবস্থাপনা মতবাদ (Managerial Approach) ঃ এই মতবাদের প্রবক্তাগণ লোক প্রশাসনকে সংকীর্ণ অর্থ ব্যবহার করার পক্ষপাতী। এই অর্থে মতবাদটি সাধারণত ব্যবস্থাপনা মতবাদ বা Managerial Approach হিসেবে খ্যাত। এদের মধ্যে লুথার গুলিক (Luther Gullick), হেনরি ফেয়ল (Henry Fayol) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। হেনরিফেয়ল (Henry Fayol), লুথার গুলিক (Luther Gullick) তাঁদের প্রবন্ধে ব্যবস্থাপনা মতবাদ (Managerial Approach) সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন। সুতরাং একথা সুস্পষ্ট যে লোক প্রশাসনের ক্ষেত্র বৃহদার্থে ও ক্ষুদ্রার্থে নিরূপণ করা যায়।
লোক প্রশাসনের পরিধি ও বিষয়বস্তু
অষ্টাদশ শতাব্দীর শিল্পবিপ্লবের প্রাক্কালে এবং জাতীয়তা ভিত্তিক রাষ্ট্রের (Nation state) বিকাশের পথে লোক প্রশাসনের গুরুত্ব ক্রমবর্ধমান হয়ে উঠে। যার ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ের পাশাপাশি লোক প্রশাসন একটি অপরিহার্য বিষয়ে পরিণত হয়। ক্রমবর্ধমান রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ৬০ এর দশকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে একটি পৃথক পাঠ্য বিষয় (An Academic Discipline) রূপায়িত হয় । কোন শাস্ত্রের গঠন-পাঠনে তিনটি মৌলিক জিজ্ঞাসা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। এর বিষয়বস্তু কি? কিভাবে একে উত্তমরূপে অধ্যয়ন করা যায়? এর চর্চা, অনুশীলন ও গবেষণার উৎসমূল কি? ইত্যাদি এখানে আমরা লোক প্রশাসনের পরিধি ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করব।
লোক প্রশাসনের ধারণা
ব্যবস্থাপনা মতবাদের প্রবক্তাদের ধারণা মতে, লোক প্রশাসন একটি নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে কতিপয় উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করে থাকে। সংগঠনের সামগ্রিক কাজ লোক প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আলোকে লোক প্রশাসনের যথাযথ বিষয়বস্তু নির্ধারণ প্রসঙ্গে Luther Gullick অত্যন্ত বাস্তবসম্মত একটি পন্থা উল্লেখ করেন। তাঁর দেওয়া ধারণা মতে, লোক প্রশাসনের বিষয়স্তুর ইংরেজি 'POSDCORB' (পসকনিসপ্রবা) এই অক্ষরগুলোর মধ্যে নিহিত রয়েছে। তাই তিনি এ অক্ষরগুলো একটি তাৎপর্যপূর্ণ অর্থও ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। নিয়ে এই অক্ষরগুলোর তাৎপর্য ও ব্যাখ্যা প্রদান করা হলোঃ
P = Planning (পরিকল্পনা) : Planning বা পরিকল্পনা হলো "The working out in broad outline the thins to be done." কোন পদ্ধতিতে কি কাজ এবং কি উদ্দেশ্যে কাজটি করা হবে তার একটি রূপরেখাই হচ্ছে পরিকল্পনা। অর্থাৎ কর্মসম্পাদনের উদ্দেশ্য, কর্মপদ্ধতি গ্রহণ ও এতদসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের নামই পরিকল্পনা। সিদ্ধান্ত গ্রহণ, উদ্দেশ্য নিরূপণ, নীতি প্রণয়ন, কর্মসূচি প্রণয়ন, নির্দিষ্ট পদ্ধতি নির্ধারণ প্রভৃতি হচ্ছে পরিকল্পনার প্রধান বিষয়বস্তু। তাই পরিকল্পনা প্রণয়ন ব্যতীত কোন সংগঠন তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হবে।
0 = Organizing (সংগঠন) সংগঠন বলতে গুলিক বৈধ প্রশাসনিক কাঠামোকে বুঝিয়েছেন। আনুষ্ঠানিক কর্তৃত্বের কাঠামো হচ্ছে সংগঠন, একটি প্রশাসনিক সংগঠনের কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ, সংস্থা, দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর প্রভৃতিতে বিভক্ত করা হয় এবং এগুলোর বৈধ রূপ দেওয়ার কাজই হলো সংগঠন। সংগঠনের প্রতিটি বিভাগে নিয়োজিত কর্মচারী ও কর্মকর্তার মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে সংগঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়।
S = Staffing (কর্মীবর্গ) প্রশাসনকে কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করে তার সংশ্লিষ্ট কর্মীবাহিনী। কর্মীর নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, বেতন-ভাতা, পদোন্নতি, অবসর, পেনশন প্রভৃতি এর অন্তর্গত। কর্মচারীদের কাজের জন্য বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করাও এই পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত। D = Directing (নির্দেশনা) নির্দেশনা বলতে বুঝায়, "Making decisions and issuing orders and instructions." সংগঠনে কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সঠিকভাবে নির্দেশনা প্রদান অপরিহার্য। তবে এই সিধান্ত গ্রহণ সংবিধিবদ্ধ নাও হতে পারে।
ক্ষেত্রবিশেষে পরিবর্তনযোগ্য যা শুধুমাত্র সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে প্রণীত ও পরিচালিত। প্রশাসনিক সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে সংগঠনের লক্ষ্য পূরণ করে থাকে। তার নির্দেশনায় অধীনস্থ কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ
কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। C = Co-ordinating (সমন্বয়) : সমন্বয় বলতে বুঝায় পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কাজের বিভিন্ন অংশের একত্রীকরণ (Co-ordination is the syncronization of action)। সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগে নিয়োজিত কর্মচারী, কর্মকর্তার মধ্যে সুসমন্বয়ের মাধ্যমে সংগঠনের একক লক্ষ্য পূরণ করা হয়। তাই সমন্বয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
লোক প্রশাসন ও বাংলাদেশ
সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত ব্যতীত একটি সম্পূর্ণ এককে পরিণত হতে পারে না। আর সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যোগাযোগ (Communication) অত্যন্ত অপরিহার্য। কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর অবহিত করা অত্যা প্রয়োজন। আর এটাই হলো প্রতিবেদন বা Reporting. সংগঠনের কার্যক্রমের অগ্রগতি, সফলতা, ব্যর্থতা, সমস্যা প্রভৃ প্রতিবেদনে স্থান পায়। তবে এই প্রতিবেদন সাধারণত লিখিত আকারে হয়ে থাকে, যার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তা অধীনস্থ কর্মচারীদের কার্যকরী মতামত প্রকাশ করা হয়। B = Budgeting (অর্থ বরাদ্দ) বাজেট বলতে বুঝায়, "Fixed planning control and accounting' সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হচ্ছে বাজেট বা আয়-ব্যয়ের হিসেবে নির্দেশ করা। প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন সরকার বাৎসরিক আয়-ব্যয় সমন্বিত বাজেট প্রণয়ন করে থাকে। কোনকোন ক্ষেত্র থেকে অর্থ আসবে এবং কোন কে ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হবে এটা একটি নির্দিষ্ট প্রতিবেদন আকারে নির্ধারণ করা হয় বাজেটের মাধ্যমে।