ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড কি এবং এর সুবিধা আছে।আমাদের দেশে বর্তমানে অনেক মানুষ আছেন যারা ফ্রিল্যান্সিংকে মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তারা শুধু একটি কোম্পানির সাথে কাজ করছেন না বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির সাথে তারা কাজ করছেন। এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য অনেকে করার ইচ্ছা পোষণ করছেন।সঠিক ধারণা এবং তথ্যের অভাবে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা হিসেবে মেনে নিতে পারছেন। না তাদের ধারণা এটি কোন অফিসিয়াল কাজ বা ভালো কোন চাকরি নয়।
ফ্রিল্যান্সারদের অতীতে খুব বেশি সাফল্য না পাওয়ার অনেক কারণ ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিলো তাদেরকে কেউ পেশাদার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।তবে সময়ের সাথে সাথে সেই চিত্র অনেকটা পাল্টে যাচ্ছে।ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা দেশে ক্রমাগত বাড়তে থাকায় তাদের জন্য বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও প্রসারিত হচ্ছে।2020 সালে আইসিটি বিভাগ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আইডিয়া প্রকল্প এবং বাংলাদেশ ফ্রীলান্সার্স ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিএফডিএস )ফ্রীল্যান্স পেশাদারদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যৌথভাবে একটি ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড পরিষেবা চালু করেছে।নতুন এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ফ্রীলান্স পেশাজীবীরা সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত ভার্চুয়াল আইডি কার্ড পাবেন এবং এটি তাদের পেশা সম্পর্কে বা আয় সম্পর্কে সবাইকে জানাতে পারবে।ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড কি এবং এর সুবিধা জেনে নেই।
অযুর সঠিক নিয়ম ও দোয়া
বিশেষ কিছু গুরুত্বপুর্ন আমল
গুরুত্বপুর্ন দোয়া সম্পর্কে জানুন
ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড কি?
এটি হলো একটি ভার্চুয়াল কার্ড যা প্রমাণ করে যে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার এবং এটি আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করে। যাতে করে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে সবাই সহজে জানতে পারবে।এটি সামাজিক স্বীকৃতি অর্জনের একটি উপায় হিসাবে দেখা যেতে পারে।ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেকেই এটা ভালো ভাবে বোঝেন না। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই আছে মোটামুটি ফ্রীলান্সিং বিষয়টা কি সে বিষয়ে বুঝতে পারে ,কিন্তু অনেকেই আছেন একেবারেই বোঝেন না।
বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই পরিচয় পত্র বা কার্ডটি আপনাকে আপনার পেশা এবং আয়ের প্রমাণ করতে সাহায্য করবে ।আপনি যদি চাকরি পেতে ঋণ পেতে বা ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে এই কার্ডটি সহায়ক হতে পারে।বিভিন্ন কারণেই আপনার পেশার প্রমাণের প্রয়োজন হইতে পারে।বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সাররা অসুবিধার সম্মুখীন হন।বাংলাদেশ সরকার ফ্রিল্যান্সার কার্ড ফ্রিল্যান্সারদের অনেক সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে এর ফলে তাদের ফ্রিল্যান্সিং পেশা আরো জনপ্রিয় হবে এবং এই পেশার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
এই কার্ডটি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ফ্রিল্যান্সিং পেশা পরিচয় ও অন্যান্য বিশদ বিবরণ নিশ্চিত করার পরে জারি করা হয়। একাটি প্রমাণ করতে ব্যবহার করা হয় যে এই ব্যক্তি একজন ফ্রিল্যান্সার এবং এক্ষেত্রে সে কাজ করার যোগ্য।তাই কেউ ইচ্ছেমতো এই পরিচয় পত্র টি বানিয়ে নিতে পারবে না।এই কার্ড পেতে হলে অবশ্যই সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে পেতে হবে।
ফ্রিল্যান্সার কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা কি কি?
একটি ফ্রিল্যান্সার কার্ড পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই একজন অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার হতে হবে। কাজের একটি প্রমাণিত রেকর্ড থাকতে হবে এবং ফ্রিল্যান্সার কোড অফ ইথিকস মেনে চলতে ইচ্ছুক হতে হবে।যারা ফ্রিল্যান্সার তারাই এই কার্ড পাওয়ার উপযুক্ত ফ্রিল্যান্সার না হলে এই কার্ড দেওয়া হয় না। এই কার্ড নেওয়ার জন্য আপনার যেসব যোগ্যতা থাকতে হবেঃ
- এই কার্ড নিতে হলে আপনাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং জাতীয় পরিচয় পত্র অবশ্যই থাকতে হবে।
- আপনি যদি 12 মাস বা এক বছরে অনলাইনে 1000 ডলার বা এর বেশি আয় করে থাকেন তবে আপনি এই সুবিধার জন্য যোগ্য।
- বিদেশি ইনকাম সোর্স থাকতে হবে।
- আপনি মার্কেটপ্লেস বা ক্লায়েন্টের কাছ থেকে যে কাজ পেয়েছেন বা করেছেন তা প্রমাণ করার জন্য আপনাকে প্রমাণ দিতে হবে। যেমন ক্লায়েন্টের সাথে যে কথাবার্তা বলেছেন কাজ নিয়ে সেগুলোর স্ক্রীনশট ,যে মার্কেটপ্লেসে কাজ ডেলিভারি দিয়েছেন তার স্ক্রিনশট।.
- আপনার উপার্জন গুলো অবশ্যই বৈধ কাজের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে।
আপনি যদি উপরের তালিকাভুক্ত যোগ্যতা পূরণ করেন তবে আপনি এই কার্ডটি গ্রহণ করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড কিভাবে পাবেন?
এই কার্ডটি পাওয়ার জন্য আপনাকে বাংলাদেশ সরকারের ফ্রিল্যান্সারদের ওয়েবসাইট freelancer.gov.bd হতে একটি আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদনপত্র পূরণ করার সময় আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে এবং আপনাকে সত্যি সত্যি একজন ফ্রিল্যান্সার হতে হবে। আপনার পরিচয় প্রমাণ করার জন্য আপনাকে কিছু নথি বা ডকুমেন্ট দিতে হবে যেটা আপনার পরিচয় যাচাই করবে। আপনার আবেদনপত্রটি প্রক্রিয়াকরণের জন্য আপনাকে 1500 টাকা আবেদন ফি দিতে হবে।
এই ফি প্রদান করে আপনি একটি ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড পাবেন। এটার মেয়াদ থাকবে এক বছর ।ভার্চুয়ালি প্রদান করা হবে এই কার্ডটি এটি দিয়ে আপনি আপনার প্রোফাইল একাউন্ট এর তথ্য দেখতে পারবেন লগইন করতে পারবেন ডাউনলোড করতে পারবেন। এই এই ভার্চুয়াল কার্ড টি আপনি প্রিন্ট করে নিজে কার তৈরি করতে পারবেন যেটা দেখতে আসল কার্ডের মতই হবে। এবং এই কার্ডটি অনলাইনে বা ব্যক্তিগতভাবে আপনার পরিচয় যাচাই করতে ব্যবহার করা যাবে।প্রয়োজনে ব্যবহার করার জন্য আপনি এটি সাথে বহন করতে পারবেন।এই আইডি কার্ডের মেয়াদ থাকবে মেয়াদ থাকবে এক বছরের জন্য এক বছর পরে আপনি আবার ফ্রী করে পরিশোধ এটি নবায়ন করতে পারবেন।
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এর জন্য ফ্রী অ্যাপস
ইউটিউব প্রিমিয়াম কি
ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ডের সুবিধা কি?
এই ফ্রিল্যান্সার কার্ডটি আপনার ফ্রিল্যান্সিং পেশার পরিচয় বহন করবে এবং প্রমাণ করবে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার। কখনো অন্য ফ্রিল্যান্সারদের সাথে বা ক্লায়েন্টের সাথে বা যেকোনো প্রয়োজনে পরিচয় প্রমাণ করার জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য উপায় হবে। এটি প্রমাণ করবে যে আপনি একজন পেশাদার ফ্রিল্যান্সার। এটি সরকার দ্বারা অনুমোদিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি অনেক সময় প্রমাণ করার প্রয়োজন হতে পারে যে আপনার পেশা কি বা আয় কত ।যেমন আপনার হয়তো কখনো ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদন করার প্রয়োজন হতে পারে অথবা বাসা ভাড়া নেওয়া শিশুকে স্কুলে ভর্তি করা বা একটি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার পেশা এবং আইয়ের প্রমাণ দেওয়ার দরকার হতে পারে।ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড কি এবং এর সুবিধা অনেক।
যারা ফ্রিল্যান্সিং কে একমাত্র বা প্রধান পেশা হিসেবে নিয়েছেন তাদের কাছে এতদিন পর্যন্ত প্রমাণ করার মত কোন ডকুমেন্ট বা প্রমাণপত্র ছিলনা। এবার সেই বন্ধ দরজা খুলে গেছে আপনার ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ডের মাধ্যমে। সরকার কর্তৃক ইস্যু করা এই পরিচয় পত্র টির মাধ্যমে আপনার কর্মজীবনের স্বীকৃতির সূচনা হয়েছে ।তাই অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করবে যে ফ্রিল্যান্সিং একটি সম্মানজনক পেশা এবং মেধাবীদের পেশা। এই পরিচয় পত্র টি প্রমাণ করে দিবে আপনার পেশা এবং সকল কিছু।
আপনার দক্ষতার স্বীকৃতি মিলবে এই কার্ডের মাধ্যমে। আপনি যদি একজন দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনার হন তাহলে আপনি এই আইডি কার্ড দিয়ে সহজেই আপনার দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারবেন। প্রমাণ করার জন্য আর কোনো বাড়তি কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে না।শুধু মাত্র পেশাদার কাজের স্বীকৃতি নয় সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার জন্য এটি ব্যবহার করা যাবে।
এটি সব ধরনের বাধা দূর করতে সহায়তা করবে। ব্যক্তিগত সামাজিক ইভেন্টগুলোতে উজ্জ্বল হওয়ার জন্য আরো ভালোভাবে সুন্দর ভাবে নিজের পরিচয় উপস্থাপন করতে পারবেন ,এবং কর্ম জীবনে সাফল্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে ।সরকার অবশেষে ফ্রিলান্সিং এর মূল্য কে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং উৎসাহিত করেছে ।যার ফলে ফ্রিল্যান্সারদেরকে অবহেলা করা থেকে সবাই সচেতন হবে এবং ধীরে ধীরে সবাই তাদের দক্ষতা সম্পর্কে বুঝতে পারবে ।তাই সামাজিকভাবেও এই কার্ডের গুরুত্ব অপরিসীম।
ফ্রিল্যান্সার কার্ড সম্পর্কে কিছু ভুল ধারনা
ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড সম্পর্কে কিছু গুজব রয়েছে অনেকেই অনেক ভুল ধারণা নিয়ে বসে আছেন। এই কার্ড সম্পর্কে এটি শুধুমাত্র সরকার থেকে পাওয়া একটি স্বীকৃতি মাত্র। অনেকেই ভাবেন ফ্রিল্যান্সার কার্ড দিয়ে সহজে লোন পাবেন। আসলে লোন পাওয়া না পাওয়া এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে ব্যাংকের ওপর। কিকি রিকোয়ারমেন্ট থাকলে আপনাকে ব্যাংক লোন দিবে সেগুলোর কাগজপত্র থাকলে আপনি ব্যাংক লোন পাবেন।
শুধুমাত্র যে ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড দিয়ে আপনি ব্যাংক লোন পাবেন এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। অনেকেই মনে করেন যে ফ্রিল্যান্সার কার্ডের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদেরকে ট্যাক্স এর আওতায় এনে তাদের কাছ থেকে টেক্স নেওয়া হবে। আসলে বিষয়টি তেমন কিছুই না, বাংলাদেশের নীতিমালা অনুযায়ী যে পরিমাণ আয় করলে ট্যাক্স দিতে হয় সেই পরিমাণ আয় করলে টেক্স সবাইকেই দিতে হব, এটার সাথে আইডি কার্ডের কোন সম্পর্ক নাই।
অনেকেই আবার ভেবে থাকেন যে ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর পরিবর্তে ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর পরিবর্তে কখনোই ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে না।এটি শুধুমাত্র আপনার পেশা এবং আয় দক্ষতা প্রমাণ করার জন্য আপনি ব্যবহার করবেন। তবে আবার ফ্রীলান্সিং টিমে কাজ করলেও ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড নেওয়া যায়।
সুতরাং আপনি যদি একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পেশা এবং আয়ের প্রমাণ করার জন্য এখনই ফ্রিল্যান্সার কার্ডের জন্য আবেদন করে ফেলুন এতে করে আপনার সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে এবং পেশাগত জীবনে অনেক কিছু সহজ হবে।