তারাবীহ নামায
যে দিন সন্ধ্যাবেলা আকাশে রমযান শরীফের চাঁদ দেখা যায় সে রাত হতে আরম্ভ করে সাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পূর্ব পর্যন্ত প্রতি রাতে এশার নামাযের পর ও বেতের নামাযের পূর্বে বিশ রাকয়াত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামায দুই রাকয়াতের নিয়তে দশ সালামে আদায় করতে হয়। এ নামাযকে তারাবীর নামায বলে। এ নামায জামায়াতের সাথে আদায় করলে অধিক সাওয়াব পাওয়া যায়।
স্ত্রী-পুরুষ রোযাদার এমনকি বে-রোযাদারের প্রতিও এ নামায আদায় করার হুকুম রয়েছে। এশার ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তারাবীর ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায় এবং এশার ওয়াক্ত শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তারাবীরওয়াক্তও শেষ হয়ে যায়। নামায একা একা এবং জামায়াতের সাথে দুই ভাবেই আদায় করার বিধান আছে। জামায়াতের সাথে আদায় করলে অধিক সাওয়াব পাওয়া যায়।
গুগল ক্রোমের নতুন ফিচার
জাপানি মেয়েদের রুপের গোপন রহস্য জেনে নিন
হযরত আনাস রাযি আঃ এর জিবন কাহিনী সম্পর্কে জানুন
তারাবীহ নামাযে ইমাম সূরা-কেরায়াত উচ্চ স্বরে পাঠ করবে। রমযান মাসে তারাবীর সাথে যদি বেতেরের নামায জামায়াতের সাথে আদায় করা হয় তাহলে সূরা কেরাতও উচ্চ স্বরে পাঠ করতে হয়। কেউ একাকী তারাবীহর নামায আদায় করলে সুরা-কিরায়াত এবং তাকবীরাদি সরবে বা নীরবে পাঠ করা তার ইচ্ছাধীন। তারাবীহ নামাযে ত্রিশ পারা কোরআন শরীফ খতম করা সুন্নত । এহা এক অসীম সাওয়াবের কাজ।তোরাবীহ নামায কখনও এশার নামাযের ফরয ও সুন্নতের পূর্বে আদায় করবে না। প্রথমে এশার চার রাকয়াত ফরয ও দুই রাকয়াত সুন্নত নামায আদায় করে তারপর তারাবীহর নামাযে শরিক হবে।
তারাবীহর নামায আদায় করার নিয়ম ঃ
দুই রাকায়াতের নিয়ত করত তাকবীরে তাহরীমা বেঁধে সানা, তাআউয, তাসমিয়া পাঠ করে সূরা ফাতেহা ও তার সাথে অন্য সুরা মিলায়ে পাঠ করবে। যথানিয়মে প্রথম রাকয়াত শেষ করে দ্বিতীয় রাকয়াতে সূরা ফাতেহা ও অন্য কোন সূরা বা আয়াত পাঠ করে রুকু সিজদা করবে। এভাবে দুই রাকয়াত আদায় করে একবার কিংবা তিনবার দুরূদ শরীফ পাঠ করে উঠে দাঁড়ায়ে আবার দুই রাকয়াতের নিয়ত করবে। প্রতি চার রাকয়াত পর পর নির্দিষ্ট দোয়া দ্বারা মোনাজাত করবে। বিশ রাকয়াত শেষে একবার মোনাজাত করলে অথবা একেবারে না করলেও কোন ক্ষতি নেই।
তারাবীহ নামাযের নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছল্লিইয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতাই ছলাতিত তারাবীহি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ ঃ আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলামুখী হয়ে দুই রাকায়াত তারাবীহর সুন্নত নামায আদায় করার জন্য নিয়ত করলাম। (ইমামের পিছনে আদায় করলে অতিরিক্ত বলতে হবে এই ইমামের পিছনে) দুই দুই রাকয়াত শেষে সালাম ফিরায়ে নিম্নের দরূদ শরীফ পাঠ করতে
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাল্লিা আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ।
কম্পিউটার রক্ষনাবেক্ষন করবেন কিভাবে জেনে নিন
গর্ভ অবস্থায় কি কি করবেন?
প্রী টাইম বাথ সম্পর্কে জানুন
চার রাকয়াত শেষে নিম্নের দোয়া পাঠ করতে হয় :
উচ্চারণ : সুবহানা যিলমুলকি ওয়াল মালাকৃতি সুবহানা যিল-ইয্যাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি, ওয়াল কুদরাতি, ওয়াল কিবরিইয়ায়ি, ওয়াল জাবারূতি । সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাযী লা ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামৃতু আবাদান আবাদান সুব্বুহুন কুদ্দূসুল রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালা-য়িকাতি ওয়ার রূহ।
অর্থ ঃ আমি তাঁরই পবিত্রতা বর্ণনা করতেছি যিনি রাজ্য ও ফেরেশতাকুলের কর্তা। আমি তাঁরই পবিত্রতা ঘোষণা করতেছি যিনি সম্মানের অধিকারী, মহীয়ান, ভয়দাতা, ক্ষমতাশালী, গৌরবান্বিত ও বৃহত্তম।সমূদয় আমি সেই চিরজীবী বাদশাহের পবিত্রতা প্রচার করতেছি যিনি নিদ্রা যান না ও অমর, তিনি পবিত্র, তিনিই আমাদের প্রতিপালক এবং ফেরেশতা ও আত্মাসমূহের পালনকর্তা।
উল্লেখিত দোয়া তিনবার বা একবার পাঠ করবে। জামায়াতে ইমামের সাথে আদায় করলে একবার পাঠ করাই উত্তম। তারপর নিম্নের দোয়া পাঠ করে মোনাজাত করবে।
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযু বিকা মিনান্নারি ইয়া খালিকাল জান্নাতি ওয়ান্নারি বিরাহমাতিকা ইয়া আযীযু ইয়া গাফ্ফারু ইয়া কারীমু ইয়া সাত্তারু ইয়া রাহীমু ইয়া জাব্বারু ইয়া খালিকু ইয়া বারু। আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নারি ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু, ইয়া মুজীরু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন
অর্থ ঃ হে আল্লাহ ! আমরা তোমার নিকট বেহেশত চাইতেছি ও দোযখ হতে মুক্তি চাইতেছি। হে স্বর্গ-নরক সৃজনকারী, তোমারই অনুগ্রহ দ্বারা হে সর্বজয়ী, হে ক্ষমাশীল, হে মহান দয়ালু, হে বৃহৎ দোষ আচ্ছাদনকারী, হে কৃপাময়, হে মহান শক্তিধর, হে মহান সৃষ্টিকর্তা, হে উপকারী, হে আল্লাহ ! আমাদিগকে দোযখ হইতে রক্ষা কর। হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী, হে রক্ষাকারী হে সর্ব শ্রেষ্ঠ দয়ালু, দাতা, তোমার অনুগ্রহে আমাদেরকে রক্ষা কর।
তারাবীহ নামাযের কতিপয় মাসয়ালা
১। তারাবীহ নামাযের নিয়ত করে প্রথমে সুবহানাকা আল্লাহুম্মা, আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতেহা পাঠান্তে কুরআন পাকের যে কোন একটি সূরা মিলায়ে প্রথমে এক রাকয়াত আদায় করে নিবে। পরবর্তী রাকয়াতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর অন্য একটি সুরা পাঠ করে রুকু সিজদা কলে তাশাহুদ দরূদ, দোয়া মাছুরা পাঠ করে সালাম ফিরায়ে যে কোন একটি দরূদ শরীফ একবার অথবা তিনবার পাঠ করে নিবে।
কি কি লক্ষন দেখা দিলে বুঝবেন আপনি গর্ভ ধারন করেছেন
কাবা ঘর নির্মানের ইতিহাস
প্রাণির ওষধি গুনাগুন ও উপকারিতা
২। তারাবীহ নামাযের সূরা পড়ার নিয়ম এই ঃ
প্রথম রাকয়াতে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর সূরা ফিল, দ্বিতীয় রাকয়াতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর সূরা কুরাইশ, এ ভাবে দুই রাকয়াত শেষ হল। আবার দুই রাকয়াতের নিয়ত করে প্রথম রাকয়াতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর সূরা মাউন পাঠ করবে, তারপর দ্বিতীয় রাকয়াতে সূরা ফাতেহা পাঠ করার পর সূরা কাউসার পাঠ করবে । এ ভাবে দুই দুই সূরা করে দুই দুই রাকয়াত পাঠ করতে করতে সূরা নাস পর্যন্ত মোট দশ রাকয়াত শেষ হবে। পুনরায় ঐভাবে পূর্বের মত সূরা ফিল হতে আরম্ভ করে সুরা নাস পর্যন্ত শেষ করলে আরো দশ রাকয়াত শেষ হবে।
এভাবে মোট বিশ রাকয়াত নামায সমাপ্ত করবে। আর একটি নিয়ম হল এই প্রথম রাকয়াতে সূরা ফাতেহার পর সূরা ফিল, দ্বিতীয় রাকয়াতে সূরা ফাতেহার পর সূরা এখলাছ, এই ভাবে প্রথম রাকয়াতে সূরাফাতেহার পর সূরা কুরাইশ পরের রাকয়াতে সুরা এখলাছ, ক্রমান্বয়ে প্রতি দুই রাকয়াতের প্রথম রাকয়াতে নিম্নের দিকের একটি সূরা দ্বিতীয় রাকয়াতে সূরা এখলাছ পাঠ করবে। এই প্রকার সূরা লাহাব পর্যন্ত শেষ করবে। ইহা অল্প শিক্ষিতদের জন্য বলা হইল। কিন্তু কুরআন শরীফ বেশী পরিমাণে কণ্ঠস্থ থাকিলে লম্বা লম্বা সূরা দ্বারা পড়া অতি উত্তম। অল্প শিক্ষিতরা সূরা আররাহমান দ্বারা পড়িতে পারিলে সবচেয়ে সংক্ষেপ হইবে। মোটের উপর উপরোল্লিখিত যেকোন নিয়মে পড়িলেই চলিবে ।
৩। প্রতি চার রাকয়াত শেষ করে কিছু সময় বসে দোয়া দুরূদ পাঠ করা ও একটু আরাম করা সুন্নত। চার রাকয়াত পর পর যদিও অনেক বুযুর্গ মোনাজাত করে থাকেন, ‘কিন্তু তার কোন প্রমাণের উপযুক্ত দলিল নেই । তাই নামায শেষ করে একত্রে একবার মোনাজাত করাই সবচেয়ে উত্তম তবে কোন প্রকার বাধ্যবধাকতা আরোপ বা অতি আবশ্যকীয় না ভেবে প্রতি চার রাকয়াত পর পর মোনাজাত করাতেও কোন দোষ নেই ।
৪ । স্ত্রীলোকের পক্ষেও তারাবীহ নামায আদায় করা আবশ্যক। তবে তারা পুরুষের মত সূরা কেরায়াত দোয়া দুরূদ ইত্যাদি জোরে জোরে না পাঠ করে চুপে চুপে পাঠ করবে।
৫। অন্যান্য নামাযের ন্যায় পুরুষদের তারাবীহ নামাযও জামাতের সাথে আদায়৷ হয়।