জাপানি মেয়েদের রূপের গোপন রহস্য

জাপানি মেয়েদের রূপের গোপন রহস্য ও টিপস জানবো আজ

চুলের যত্ন কিভাবে নিবেন
মোবাইল ফোনের ১০টি ক্ষতিকর দিক
এসইও কি এবং কিভাবে করবেন

কেমন হতো যদি রূপকথার রাজ্যের মত কারো বয়স থেমে থাকত!

কিন্তু রূপকথার গল্প তো সত্যি হয় না, পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যেখানে মেয়েদের বয়স বাড়েনা দেশটির নাম কি জানেন দেশটির নাম হলো জাপান। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ওই দেশের মেয়েদের বয়স বাড়েনা ওদেরকে দেখলে মনে হয় একেক জন একেকটা পুতুল। ফিগার, স্কিন, চুল এত সুন্দর যে , তাদের ভারী কোন মেকআপ ব্যবহার করতে হয় না।

 তাদের বয়স কত সেটা দেখে কেউই বলতে পারবোনা।২৫ বছরে রেকর্ডে জাপানি মেয়েরা ধরে রেখেছে তাদের দীর্ঘায়ু, তারা ৮৫ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এমনকি তারা যে শুধু ৮৫ বছর বেঁচে থাকে শুধু তাই না তাদের জীবনকালে তারা ধরে রাখে তারন্য।জাপানি মেয়েদের রূপের গোপন রহস্য আজ আলোচনা করব।

জাপানের মানুষ অনেক বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকেন বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে ।জাপানের মানুষের গড় আয়ু অনেক বেশি। বর্তমানে ১১৭ বছর বয়সী একজন নারী বেঁচে আছে যিনি জাপানের নাগরিক। জাপানের প্রায় 50 শতাংশ মানুষ এমন দীর্ঘ আয়ু নিয়ে বেঁচে আছে। এই সুস্থ থাকার গোপন রহস্য আজ আমরা জানবো যেখানে আমাদের সবার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।

জাপানি মেয়েদের রূপের গোপন রহস্য
ট্রেডিং কি? ট্রেডিং কিভাবে কাজ করে
তালাকের সঠিক মাসাআলা সম্পর্কে জেনে নিন

কিভাবে তারা সুস্থ থাকে?

তাদের বয়স ধরে রাখার অন্যতম কারণ হলো শরীর চর্চা এবং সাইকেলিং। নিয়মিত শরীর চর্চা কখনো বাদ পড়ে না তাদের ডেইলি রুটিন থেকে।ট্রান্সপোর্ট তারা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বা সাইকেল ব্যবহার করে নিজের গাড়ি থাকা সত্বেও তারা সাইকেল বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে এদিক-সেদিক যাতায়াত করে।এমনকি তাদের দেশে বাচ্চারাও স্কুলে যায় সাইকেল চালিয়ে ফলে সেসব দেশের সেখানকার বাচ্চারা ও মোটা হয় না।

জাপানি মেয়েরা প্রতিদিন প্রায় একই ধরনের খাবার খায় এবং যেগুলোতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে সেই খাবারগুলো তারা বেশি খেয়ে থাকে। নিয়মিত বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে পছন্দ করেন। শুনলে অবাক হবেন জাপানের মানুষ পৃথিবীর প্রায় 10% মাছ খেয়ে থাকে। ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওার কারণে তারা বেশি দিন বেঁচে থাকে এছাড়াও তারা ফুলকপির ব্রকলি ইত্যাদি খাওয়ার ফলে সুস্থ থাকে। তাছাড়া তারা মৌসুমী ফল এবং সতেজ খাবার বেশি খেয়ে থাকে সেখানকার সুপারশপ গুলোতে বাসি কোন খাবার পাওয়া যায় না।প্রতিদিন প্যাকেট হওয়ার আধা ঘন্টার মধ্যে মাছ মাংস খাবার জন্য প্রস্তুত থাকে।এজন্য তারা সঠিক পুষ্টি টা পেয়ে থাকেন।

তারা প্রায় সব ধরনের খাবার খায় তবে সেটা খুব অল্প পরিমাণে। তারা কখনোই বাটি ভরে খাবার খায় না এবং প্রতিটি খাবারই আলাদা আলাদা বাটিতে পরিবেশন করে খায় এবং তারা খুব অল্প পরিমাণে মসলা দিয়ে রান্না করে। যেসব তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তারা সেই সব তেল দিয়ে রান্না করে। মজার বিষয় হলো আমরা ভাতের পরিবর্তে রুটি খাই মেদ কমানোর জন্য আর জাপানি মেয়েরা রুটির পরিবর্তে ভাত খায় কারণ গবেষণায় দেখা গেছে গমের রুটি মোটা হওয়ার কারণ। তাই তারা ব্রাউন রাইস খেয়ে থাকে।তাদের রান্নার ধরন অনেক সহজ তারা অনেক সময় ধরে ধীরে ধীরে রান্না করে এবং ভালো করে সেদ্ধ করে।ছোটবেলা থেকে জাপানি শিশুদেরকে শেখানো  হয় ধীরে ধীরে খাওয়া যেন তারা খাবারকে উপভোগ করতে পারে।

জাপানিরা চপিস্টিক দিয়ে খাবার খায় এই চপিস্টিক দিয়ে চপ স্টিক দিয়ে খাবার খাওয়ার আরও একটি কারণ হলো যেন কম খেতে পারে। জাপানি মেয়েরা দিনের শুরুটা করেন ভারী খাবার দিয়ে। তাদের খাবারে রুটিনে থাকে সামুদ্রিক শৈবাল একটুকরো মাছ ও গ্রিন-টি । এবং রাতের খাবার শেষ করে তারা হালকা ডিনার দিয়ে। তারা মিষ্টি থেকে সবসময় দূরে থাকা থাকে, তাদের মেনুতে থাকে না কখনো চকলেট আইসক্রিম এবং কেক।তবে তার মানে এই না যে তারা চকলেট আইসক্রিম কেক এগুলো খায় না ।তবে তারা এসব খাবারের নেতিবাচক দিকগুলো অনুসরণ করে যাতে করে তাদের ফিটনেস বজায় থাকে। 

জাপানি মেয়েদের রুপচর্চা

জাপানিরা বাজারের কেনা কসমেটিক প্রোডাক্ট ব্যবহার করে না তারা সব সময়ই প্রাকৃতিক ভাবে রূপচর্চা করে।জাপানি মেয়েরা সানস্ক্রিন এর পরিবর্তে ছাতা বা টুপি ব্যবহার করে তাদের ত্বককে প্রাকৃতিক ভাবে উজ্জ্বল রাখে।প্রতিদিন গোসল করা গোসল করাকে জাপানি মেয়েরা একটি রূপচর্চার অংশ হিসেবে দেখে তারা ঝরনা ব্যবহার করে গোসল করে না।

তারা বাথটাবে হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পছন্দ করে এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত শরীর ডুবিয়ে রাখে।বাথটাবের পানিতে নানা ধরনের সুগন্ধি ফুল অথবা এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করে এতে তাদের শরীর ও মন সতেজ থাকে এবং ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়। রাতে ঘুমানোর আগে এ ধরনের গোসল তাদেরকে বেশি রিলাক্স করে ফলে রাতে আরাম দায়ক ঘুম হয়।শতবর্ষ ধরে জাপানি মেয়েরা ক্যামেলিয়া অয়েল ব্যবহার করে এটি দিয়ে তারা চুল এবং ত্বকের পরিচর্যা করে।।এই অয়েলে রয়েছে ওমেগা নাইন  ফ্যাটি এসিড গ্লিসারাইড যা তাদের চুলকে ঘন এবং মসৃণ করে তোলে এমনকি তারা খাবারে এই তেল তারা ব্যবহার করে ফলে ব্লাডপ্রেসার কমায়।

এছাড়াও তারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেয়ে থাকে ফলে তাদের স্কিন মসৃণ এবং উজ্জ্বল হয় এছাড়াও তারা তাদের ত্বক দাগ মুক্ত করতে গ্রীন টি ফেসপ্যাক ব্যবহার করে থাকে।তারা প্রতিদিন গ্রীন টি পান করে থাকে যেন তারা স্লিম থাকে। ত্বকের মেসেজ জাপানি মেয়েদের ধারণা মেসেজ ত্বকের করলে মুখে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা পড়ে না এজন্য তারা নানান ধরনের মুভমেন্ট ত্বকে এপ্লাই করে।

 জাপানিদের লাইফ স্টাইল

জাপান বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক দেশ বিশ্বে একটি ধনী দেশ হয়েও তাদের ঘরে কোন কাজের লোক থাকে না। তারা সংসারের কাজ নিজেরাই করে থাকে ,সংসারের কাজের দায়িত্ব নিয়ে থাকে মা বাবা আর তাদেরকে কাজে সহযোগিতা করে বাচ্চারা।

জাপানিরা হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করে তারা সবসময় আত্মীয় স্বজন পরিবার নিয়ে সময় কাটায় এমনটা করার জন্য তারা ঘর থেকে বাইরে সময় অতিবাহিত করেন। জাপানের মানুষ অনেক সামাজিক তাদের ঘর অনেকটা ছোট হয়ে থাকে সেজন্য তারা একজন আরেকজনের সাথে দেখা করার জন্য বাইরে আসে।

জাপানে শিক্ষা জীবনে প্রথম তিন বছরে কোন পরীক্ষা হয় না তারা মনে করে লেখাপড়া চরিত্র গঠনের জন্য পরীক্ষা নেওয়ার জন্য না ।জাপানের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষকদের সাথে.১৫ মিনিট ধরে স্কুল পরিষ্কার করার কাজে সহযোগিতা করে।জাপানের স্কুলগুলোতে শিক্ষা জীবনের প্রথম ছয় বছর শেখানো হয় নৈতিকতা।কিভাবে মানুষের সাথে আচার ব্যবহার করতে হবে যাতে তা সেটা তারা শিখতে পারে ।জাপানে সাক্ষরতার হার শতকরা ১০০ ভাগ। তাদের সংবাদ পত্রিকা গুলোতে আমাদের দেশের মত রাজনীতি, বিনোদ, সিনেমা এসব খবর ছাপানো হয় না। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় এবং আধুনিক জগত সম্পর্কে খবর ছাপানো হয়। এইসব গুণের কারণে তারা এত উন্নত জাতিতে পরিণত হয়েছে।

জাপানের যারা রাস্তা পরিষ্কারের কাজ করে যাদেরকে হেলথ ইঞ্জিনিয়ার বলা হয়।  জাপানিরা রাস্তায় ময়লা ফেলে না,যারা ধূমপায়ী তারা পকেটএ ছাইদানি নিয়ে ঘুরে বেড়ায।তারা খাবার অপচয় করে না রেস্টুরেন্টে গেলে যার যতটুকু দরকার সে ততটুকুই নিবে ।তাদের আত্মসম্মান খুব বেশি। সাধারণত আমাদের দেশে অফিসে ঘুমানো খুবই অসন্মান জনক কিন্তু জাপানের পুরো উল্টা জাপানে অফিসে ঘুমালে তারা ধরে নেয় ঘুমন্ত ব্যক্তির উপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ।এতে বসের সামনে তার ভাবমূর্তি ভালো হয়।

জাপান উন্নত একটি দেশ।প্রশান্ত মহাসাগরের একদম পূর্বকনে ৬৮০০ টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ছোট্ট একটি দেশ ।অবাক করা দেশ জাপান, অনেক কিছু শেখার আছে জাপানিদের কাছ থেকে।এ ছিল আজকের আলোচনা জাপানিদের নিয়ে।