দৈনন্দিন জীবনে যোগাযোগের জন্য ইমো খুব সহজ একটি মাধ্যম আর এই মাধ্যমটি খুব জনপ্রিয় বাংলাদেশ। বিনামূল্যে আমরা এই অ্যাপসটির মাধ্যমে একজন আরেকজনের সাথে ভিডিও, কল অডিও কল অথবা চ্যাটিং করতে পারি। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ টেলিগ্রাম, ভাইবার ইত্যাদি অনেক মেসেজিং অ্যাপ এর মত এটিও সেবা দিচ্ছে। কিন্তু মাঝে মধ্যে আমরা বুঝতে পারি না আমাদের ইমো হ্যাক হয়েছে কিনা।
আজকে আমরা আলোচনা করব ইমু হ্যাক হয়েছে কিনা সেটা বুঝবো কিভাবে। অনেকেই অভিযোগ করে তাদের ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেছে আসলে হ্যাকিং বলতে আমরা যেটা বুঝি সেটা হচ্ছে আমাদের ইমো একাউন্ট অন্য ডিভাইসে লগ ইন করা হচ্ছে এবং অন্যকেও সেই একাউন্টে ব্যবহার করছে। কি কি কারণে ইমো হ্যাক হয় আর আপনি সেটা কিভাবে বুঝবেন সেটা নিয়েই আজকের আলোচনা করব।
মেয়েদের ঘরে বসে আয়
ইমো হ্যাক হয় কিভাবে?
ইমো হ্যাকিং হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। ইউজারের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এক্সেস নিয়ে ইমো একাউন্ট হ্যাক করা হয় । অপরিচিত মানুষকে ইউজার যখন কন্টাক্ট করেন তখনই হ্যাকাররা এই সুবিধাটা পায়। মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ হয়ে গেলে এরপর সে মোবাইলে একটা ইমো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে হ্যাকার এবং সে লগইন করার সময় একটা ওটিপি কোড এর প্রয়োজন হয় ।এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ওটিপি কোড হ্যাকার কিভাবে সংগ্রহ করে?
এই ওটিপি কোড সংগ্রহ করার জন্য হ্যাকার অনেক সময় বা বেশিরভাগ সময়ই ইউজারের মোবাইলে ফোন করে ইমুর অথরিটি সেজে। তখন ইউজার বুঝতে না পারে ওটিপি কোড দিয়ে দেয় এক্ষেত্রে হ্যাকার খুব সহজেই ওটিপি নিয়ে ইমো অ্যাকাউন্ট লগইন করে ইউজারের অ্যাকাউন্টটি হ্যাক করে ফেলে এবং সে ওই ইউজারের অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করতে পারে।
কিভাবে বুঝবেন আপনার ইমো অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে?
- প্রথমে আপনি আপনার মোবাইল ফোন থেকে ইমো অ্যাপটি ওপেন করবেন আর যদি সেটা ইন্সটল করা না থাকে তাহলে ইনস্টল করে তারপর সেটা ওপেন করেন।
- অ্যাপ ওপেন হলেন চেকলিস্ট এর উপরে বাম পাশে কোনায় আপনার প্রোফাইল পিকচার দেখতে পাবেন সেই প্রোফাইল পিকচার টি ক্লিক করুন।
- এরপর প্রোফাইল পিকচারে ক্লিক করার পরে আপনি সেটিংস নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেটিংস অপশনে আপনার অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন অপশন পরিবর্তন করতে পারবেন।
- সেটিংস অপশনে যাবার পরে আপনার সামনে অনেকগুলো অপশন চলে আসবে সেখান থেকে আপনি একাউন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি অপশনটি সিলেক্ট করেন এবং ওই অপশনে আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা সম্পর্কিত সব ধরনের বিষয় পরিবর্তন করার সুযোগ আছে।
- আপনি চাইলে সেখান থেকে নতুন পাসওয়ার্ড ক্রিয়েট করতে পারবেন।
- ম্যানেজ ডিভাইস অপশনে ক্লিক করুন এবং সেখানে আপনি দেখতে পাবেন আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট অন্য কোন ডিভাইসে লগ ইন করা আছে কিনা। যদি দেখেন আপনার ডিভাইস ছাড়াও অন্য আরো অনেকগুলো ডিভাইসে ইমো অ্যাকাউন্ট লগইন করা আছে সে ক্ষেত্রে আপনি বুঝবেন যে আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে অথবা অন্য কেউ অন্য ডিভাইসে আপনার একাউন্টে ব্যবহার করছে।
- সে ক্ষেত্রে আপনি যত দ্রুত সম্ভব ডিভাইস থেকে ইমো অ্যাকাউন্ট লগআউট করে দেবেন এবং অন্য ডিভাইস থেকেও অ্যাকাউন্ট লগআউট করে দিয়ে নিরাপদ থাকবেন।
- যদি আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট টি হ্যাক হয়ে থাকে তাহলে শেষ কখন ব্যবহার হয়েছে সেই সময় টা দেখাবে অন্য ডিভাইসে কখন লগইন করা হয়েছে কখন এক্টিভ ছিল, লোকেশন এ সব দেখাবে। এখান থেকে আপনি বুঝে নিতে পারবেন যে আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা, যদি কোন ডিভাইস থাকে যেটা আপনার নয়, আপনি লগইন করেননি তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হয়েছে।
ইমো হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়
- ইমু হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা পেতে হলে সতর্ক হতে হবে এবং কিছু সাধারণ বিষয় গুলো ফলো করতে হবে।
- সর্বপ্রথমেই যে বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে সেটা হলো চ্যাট লিস্টে যেন অপরিচিত কেউ না থাকে।
- অপরিচিত কেউ মিথ্যা পরিচয় দিয়ে কোন একাউন্ট থেকে আপনাকে মেসেজ করলে সেটার রিপ্লাই না করাই ভালো।
- আর হচ্ছে প্রাইভেসি অপশন পাবলিক করে না রাখাই ভালো পার্সোনাল বিষয়গুলো শেয়ার করা থেকে বিরত থাকবেন।
- সেটিংস অপশনে গিয়ে অবশ্যই কিছুদিন পরপর চেক করবেন অন্য ডিভাইসে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন আছে কিনা।
- আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল ওটিপি পাসওয়ার্ড কখনোই কাউকে দিবেন না।
ইমো হ্যাক হলে করণীয়
আপনার ইমো অ্যাকাউন্ট যদি হ্যাক হয়ে থাকে তাহলে নিচের বিষয়গুলো মাধ্যমে আপনি হ্যাকিং থেকে বাঁচতে পারবেন ।
সেটিংস অপশনে যাবেন সেখান থেকে একাউন্ট সিকিউরিটিতে যাবেন ।
তারপর ম্যানেজ ডিভাইস নামে একটা অপশন আসবে সেখানে ক্লিক করে যে ডিভাইসগুলো থেকে লগইন করা হয়েছে দেখা যাচ্ছে সেই ডিভাইসগুলো থেকে লগআউট করে ফেলবেন।
তারপর যে নাম্বারটা দিয়ে আপনি ইমু একাউন্ট খুলেছেন সেই নাম্বার টা পাল্টে ফেলে নতুন একটা নাম্বার সেট করবেন।
আর যদি পরিবর্তন করতে না চান তাহলে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে নতুন একাউন্ট খুলতে পারবেন সেটিংস থেকেও ডিলিট অপশন এ গেলে ডিলিট ইমো একাউন্ট ক্লিক করলেই আপনার আগের অ্যাকাউন্টটি ডিলিট হয়ে যাবে।
ডিলিট হয়ে গেলে হ্যাকাররা চাইলেও আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবে না আর নতুন অ্যাকাউন্ট যদি তারা হ্যাক করতে চায় সেক্ষেত্রে আবার তাদের নতুন করে ভেরিফিকেশন কোড মানে ওটিপি কোড নিতে হবে। কিন্তু ততক্ষণে আপনিতো সচেতন হয়ে গেছেন কাউকে ওটিপি কোড আর ভুলেও দিবেন না।
সুতরাং সাধারণ কিছু স্টেপ ফলো করে আপনি হ্যাকারদের হাত থেকে আপনার ইমো একাউন্ট টি সুরক্ষিত রাখতে পারবেন আপনার অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হবার আগেই আপনি সচেতন হোন।